নারায়ণগঞ্জ সদর ও ফতুল্লা সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে দলিল লিখকরা জনস্বার্থে মানুষের জান মালের নিরাপত্তার দাবীতে নারায়ণগঞ্জ জেলা রেজিষ্ট্রেশন কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে দলিল লিখার কার্য সম্পাদন ও গ্রাহক সেবার লক্ষে নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদ সংলগ্ন লিংক রোডে অবস্থিত জেলা রেজিষ্ট্রেশন কমপ্লেক্সে ভবন নির্মাণের দাবীতে ডিসি, এসপির কাছে চিঠি দিয়েছে দলিল লেখক ও সেবা প্রত্যাশায়ী জনগণ। বিভিন্ন বিষয় পর্যালোচনায় ৭ আগষ্ট সকালে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছে আন্দোলনকারীরা।
গত ৪ আগষ্ট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে দালিখকৃত দলিল লিখকদের চিঠির স্মারক নং-৯৬০৯ এর আবেদনে জানা যায়, দীর্ঘ তিন বৎসর যাবৎ নারায়ণগঞ্জ জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগের জায়গায় অস্থায়ী ভাবে টিনশেড ঘর নির্মাণ করে দলিল লিখার কাজ সম্পাদন সহ সেবা প্রত্যাশায়ী জনগণকে বসে সেবা দিয়ে আসছিল নারায়ণগঞ্জ সদর ও ফতুল্লার সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের দলিল লিখকগণ। কিন্তু সম্প্রতি সড়ক ও জনপথ বিভাগ তাদের প্রয়োজনে টিনশেড ঘরটি ভেঙ্গে ফেলায় দলিল লিখকরাসহ সেবা প্রত্যাশায়ী জনগণ অন্ত্যান্ত দূর্ভোগে পড়ে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা রেজিষ্ট্রেশন কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে পর্যাপ্ত পরিমাণে খালি জায়গা রয়েছে। উক্ত জায়গায় দলিল লিখক ও সেবা প্রত্যাশায়ীদের জন্য একটি ভবন নির্মাণ করে সমস্যা সমাধান করা যায় বলে ভুক্ত ভোগীরা জানান। দলিল লিখকরা সরকারকে প্রতি মাসে প্রায় দুইশত কোটি টাকা রাজস্ব দিলেও তাদের প্রতি জেলা রেজিষ্ট্রারের কোন মাথা ব্যথা নাই। জেলা রেজিষ্ট্রেশন কমপ্লেক্স ভবন উদ্বোধনের সময় আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আনিছুল হক এমপি ও তৎকালীন মহাপরিদর্শক (নিবন্ধন) তাদের বক্তৃতায় বলেছিলেন, কমপ্লেক্সের আঙ্গিনায় যে খালী জায়গা রয়েছে সেখানে দলিল লিখকদের বসার ব্যবস্থা করবেন এবং দ্রুতই সেবা গ্রহণকারীদের ভোগান্তি লাঘবের আশ্বাস প্রদান করেন। কিন্তু সেই আশ্বাসের ঘোষণা আদৌ বাস্তবায়ন হয়নি। অথচ নিবন্ধন মেন্যুয়েল ২০১৪ (দ্বিতীয় খন্ড) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার আইন, বিচার সংসদ বিচার মন্ত্রণালয় এবং আইন ও বিচার বিভাগ কর্তৃক জারিকৃত ২ ডিসেম্বর ২০১৪ সালের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে এক্সভিআই অফ ১৯০৮ এর সেকশন ৮০জি এ প্রদত্ত ক্ষমতা বলে ইন্সপেক্টর জেনারেল কর্তৃক প্রস্তুতকৃত নিম্নরূপ বিধিমালায় সরকার কর্তৃক অনুমোদনক্রমে ৭নং কলামে সনদ প্রাপ্ত দলিল লিখকগণের দলিল লিখার কার্য সম্পাদান করার জন্য সাধারণ অধিকার সমূহে বর্ণিত কার্যালয়ের সীমানার মধ্যে বসতে পারবে এবং নিবন্ধনকারী কর্মকর্তার নিয়ন্ত্রণ ও তত্ত্বাবধানে সনদে প্রদত্ত ক্ষমা বলে পেশাগত কাজ করার লক্ষে কমপ্লেক্সে প্রবেশ করার অনুমতি দেওয়া হবে। কিন্তু বর্তমান জেলা রেজিষ্ট্রারের কাছে ভবন নির্মাণ সহ আর্থিক নিরাপত্তার কথা দলিল লিখকরা জানালেও তিনি তেমন কোন উদ্যোগ নিচ্ছে না। যার ফলে দলিল লিখকরা দাবী আদায়সহ সরকারি প্রজ্ঞাপন বাস্তবায়নের লক্ষে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে।
এই লক্ষে নারায়ণগঞ্জ জেলা রেজিষ্ট্রেশন কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে ভবন নির্মাণসহ দলিল লিখার কাজ ও জনস্বার্থে আর্থিক নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় অনুমতি প্রার্থনা করে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপারের বরাবর একটি গুরুত্বপূর্ণ চিঠি দিয়েছে নারায়ণগঞ্জ সদর ও ফতুল্লার সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের দলিল লিখক ও সেবা প্রত্যাশায়ীরা। জেলা রেজিষ্ট্রেশন কমপ্লেক ভবনে বর্তমানে থমথমে ভাব বিরাজ করছে। আগামী ২/৩ দিনের মধ্যেই মানববন্ধনসহ বৃহত্তর কর্মসূচীর ঘোষণায় যাচ্ছে আন্দোলনরত দলিল লিখকরা।